চলতি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ব্যাটারদের সেঞ্চুরি ছিল মাত্র একটি। সেটিও লোয়ার অর্ডারে ব্যাটিং করা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাট থেকে। বাংলাদেশের টপ অর্ডারে খেলা লিটন দাস, তানজিদ হাসান তামিমরা পঞ্চাশ পেরোনো ইনিংস খেললেও কেউ সেঞ্চুরি করতে পারেননি। সেটির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে শ্রীধরন শ্রীরাম জানান, বাংলাদেশের ব্যাটাররা হাফ সেঞ্চুরি পেলেই খুশি হয়ে যায়। তাদের মাঝে সেঞ্চুরি পাওয়ার ক্ষুধাও খানিকটা কম!
এদিকে বিশ্বকাপ নিয়ে আকাশচুম্বী প্রত্যাশা থাকলেও সেটার ধারে কাছেও যেতে পারেনি বাংলাদেশের। বোলারদের মতো পুরো বিশ্বকাপে ব্যর্থতার গল্প লিখেছেন ব্যাটাররা। ১১ হাফ সেঞ্চুরি এসেছে ভিন্ন ৮ ব্যাটারের কাছ থেকে। তাতেই পরিস্কার ব্যাটার হিসেবে বলার মতো সাফল্য নেই কারও। তামিম ইকবালের বদলি হিসেবে বিশ্বকাপে সুযোগ পেয়েছিলেন তানজিদ তামিম।
প্রস্তুতি ম্যাচে ভালো করলেও মূল পর্বে আলো ছড়াতে পারেননি। ভারতের বিপক্ষে অবশ্য দুর্দান্ত শুরু এনে দিয়েছিলেন তরুণ এই ওপেনার। দ্রুত হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিলেও সেটি সেঞ্চুরিতে রূপ দিতে পারেননি। ভারতের বোলারদের যখন অনায়াসে খেলছিলেন তখনই আউট হয়ে ফেরেন সাজঘরে। নিজের পক্ষে থাকার পরও সেঞ্চুরি করতে না পারায় খানিকটা হতাশ শ্রীরাম।
এদিকে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পরামর্শক হিসেবে কাজ করা শ্রীরাম ইএসপিএন ক্রিকইনফোকে বলেন, ‘তানজিদ যখন ভারতের বিপক্ষে হাফ সেঞ্চুরি পেলো তখন সবকিছুই তার পক্ষে ছিল। বোলারকে তাকে সেভাবে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারছিল না। উইকেটটা খুব ভালো ছিল। আর এক ওভার পরই কুলদীপ যাদবকে সরিয়ে নেয়া হতো। তারপর অন্য কেউ হয়ত বোলিংয়ে আসতো।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের তখন বিনা উইকেটে ৯৭ রান (৯৩) ছিল। সে যদি তার হাফ সেঞ্চুরিটা সেঞ্চুরিতে রূপান্তর করতো তাহলে আপনি আমাকে এই প্রশ্ন করতেন না। এখানেই সে নিজেকে ডুবিয়েছে। সেখানেই মানসিকতা বদলে গেছে। তারা আসলে আন্তর্জাতিক ম্যাচে একটা হাফ সেঞ্চুরি পেলেই খুশি হয়ে যায়।’
এ সময় শ্রীরাম বলেন, ‘সবশেষ ৬-৮ মাসে শান্ত যেভাবে হাফ সেঞ্চুরিকে সেঞ্চুরিতে রূপান্তর করেছে তাতে আমার মনে হয় তরুণরা তাকে অনুসরণ করতে পারে। সে যদি হাফ সেঞ্চুরি পেয়ে খুশি হয়ে না যেতো এবং প্যাডেল পা রাখতো তাহলে সে সেঞ্চুরি পেতো। আমার মনে হয় তার মাঝে অনেক সম্ভাবনা আছে। এই খেলোয়াড়দের নিয়ে উদ্বেগের জায়গা হলো তারা হাফ সেঞ্চুরি পেলেই খুশি হয়ে যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাদেরকে এসব থেকে বেরিয়ে আসতে হবে এবং বড় রান করতে হবে। বিশ্ব ক্রিকেট এভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে। সব তরুণই হাফ সেঞ্চুরিকে সেঞ্চুরিতে রূপান্তর করছে। রাচিন রবীন্দ্র এটার সেরা উদাহরণ। এদের দেখে শিখুন এবং নিজেকে সামনে এগিয়ে নিন। সেই সঙ্গে বড় রান করার জন্য ক্ষুধার্ত হয়ে উঠুন।’